ইদানীং আশ্চর্য রকম এক নীরবতা খেলে যাচ্ছে তার চোখে-মুখে। সবকিছুতেই কেমন যেন উদাস ভাব। দিন কয়েক আগেও তো স্বাভাবিক ছিল লোকটা। হাসত, গাইত আর কাজ শেষে বাড়ি ফিরত। বাড়িতে এসে শেফালীর কাজে বেশ সাহায্যও করত। কিন্তু কিছুদিন থেকে তার এ রকম গাঢ় নীরবতা খুব পীড়া দিচ্ছে স্ত্রী শেফালীকে। বিশেষ করে একমাত্র মেয়ে ফোসোর বিয়ে দেওয়ার পর থেকেই এ রকম মনমরা ভাব দেখা যাচ্ছে। শীতের লোহার মতো দিনে দিনে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে লোকটা। আগের মতো প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে না আর। মন কেমন করে ওঠে শেফালীর। পাহাড় সমান সোহাগ নিয়ে তাকায় ঘুমন্ত স্বামীর দিকে। চড়ুইপাখির মতো শান্ত মুখ তার স্বামী সলিমের। শ্যামলা রঙা চোখ। চোখের নিচে লম্বা কালশিটে দাগ। সেই চোখ জোড়ায় এখন গভীর ঘুম। শেফালীর বুকটা হুহু করে ওঠে। পরম মমতায় আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে দেয় স্বামীর চুলে। কিন্তু চুলে আঙুল ঢোকে না। চুলগুলো শক্ত হয়ে গেছে তারের মতো।